ঔষধি গাছ: ৫০০ রোগের সমাধান করুন ৬ টি ঔষধি গাছ ব্যবহার করে
১৬ টি ঔষধি গাছ: ৫০০ রোগের সহজ সমাধান
১৬ টি ওষুধি গাছ যা দিয়ে ৫০০ রোগের সহজ সমাধান রয়েছে, আসসালামুয়ালাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই ভাল আছেন, আজকের পোস্টে আপনাদের জানাবো, ঔষধি গাছ সম্পর্কে। এখানে আপনারা ঔষধি গাছের উপকারিতা, ঔষধি গাছের নাম ও উপকারিতা, ঔষধি গাছের নাম ও ছবি pdf, ঔষধি গাছের ছবি ও নাম সহ জানতে পারবেন।
বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন ১৬ টি ঔষধি গাছের নামের তালিকা।
- নিম গাছ (Neem Tree)
- তুলসী গাছ (Holy Basil)
- আলোয় ভেরা (Aloe Vera)
- আমলকি (Indian Gooseberry)
- ব্রাহ্মী (Brahmi)
- গোটুকোলা (Gotu Kola)
- কালো জিরা (Black Seed)
- মেথি গাছ (Fenugreek)
- বৃহত মরিচ (Long Pepper)
- মন্দুকপানি (Indian Pennywort)
- হলুদ গাছ (Turmeric Plant)
- কর্ণেলিয়ানুস (Coriander)
- মিথা নিম (Curry Leaf)
- বিলেবিজ (Bael Fruit Tree)
- আকনে গাছ (Akwan Plant)
- পুদিনা (Mint)
আরও দুটি ঔষধি গাছের নাম বা ফলের গুণাগুণ জেনে নিন
এখানে আপনারা ১৬ টি ওষুধেও গাছের সাথে সাথে আরো, 10 টি ঔষধি গাছের নাম ও উপকারিতা এবং বিভিন্ন গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আমলকী
আমলকীর ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকীতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ দরকার। দিনে দুটো আমলকী খেলে এ পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়।
আমলকীর ঔষধি গুণ
- আমলকী কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে।
- বমি বন্থে কাজ করে।
- দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী।
- এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে।
- বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও রোগ প্রতিরোধক ৰমতা গড়ে তুলতেও আমলকী দারুণ সাহায্য করে।
- আমলকীর গুণাগুণের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এখন আমলকীর নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমলকী খাওয়ার উপকারিতা
1.ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ আমলকীতে যথেষ্ট পরিমাণে এ্যান্টি অঙ্েিডন্ট রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিকালস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বুড়িয়ে যাওয়া ও সেল ডিজেনারেশনের অন্যতম কারণ এই ফ্রি র্যাডিকালস।
2.আমলকী ত্বক, চুল ও চোখ ভাল রাখার জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো- কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িও ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
3.আমলকী হজমে সাহায্য করে ও স্টমাক এ্যাসিডে ব্যালেন্স বজার রাখে।
4.আমলকী লিভার ভাল রাখে, ব্রেনের কার্যকলাপে সাহায্য করে ফলে মেন্টাল ফাংশনিং ভাল হয়।
5.আমলকী বস্নাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল লেভেলেও কম রাখাতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
6.হার্ট সুস্থ রাখে, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে তোলে।
7.শরীর ঠান্ডা রাখে, শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, মাসল টোন মজবুত করে।
8.লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলে দাঁত ও নখ ভাল রাখে।
9.জ্বর, বদহজম, সানবার্ন, সানস্ট্রোক থেকে রৰা করে।
10.আমলকীর জুস দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখার জন্য উপকারী। ছানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যায় উপকারী।
11.পেটের জ্বালা জ্বালাভাব কম রাখে। লিভারের কার্যকলাপে সাহায্য করে, পাইলস সমস্যা কমায়।
12.শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। ব্রঙ্কাইটেসও এ্যাজমার জন্য আমলকীর জুস উপকারী
13.আমলকী গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে থেকে পারেন। খিতে বাড়াতে সাহায্য করে
14.এক গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে আমলকী গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন। এ্যাসিডেটের সমস্যা কম রাখতে সাহায্য করবে।
15.আমলকীতে সামান্য লবণ, লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রাখুন। শুকিয়ে যাওয়ার পর খেতে পারেন।
16.খাবারের সঙ্গে আমলকীর আচার খেতে পারেন। হজমে সাহায্য করবে।
17.আমলকী মাঝারি আকারে টুকরো করে নিয়ে ফুটনত্ম পানির মধ্যে দিন। আমলকী নরম হয়ে তরে নামিয়ে ঝরিয়ে লবণ, আদা কুঁচি, লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রেখে দিতে পারেন। সারা বছরই ভাল থাকবে।
বাসক
বাসক একটি ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজউদ্ভিদ। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশী জন্মে। লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশী। হালকা হলুদে রংয়ের ডালপালায়ক্ত ১ থেকে ২ মি. উঁচু গাছ, ঋতুভেদে সর্ব্বদাই প্রায় সবুজ থাকে, চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ঔষধি গাছ বাসকের উপকারিতা সম্পর্কে।
বাসকের উপকারিতা
বাসক পাতার রস ১-২ চামচ হাফ থেকে এক চামচ মধুসহ খেলে শিশুর সদির্কাশি উপকার পাওয়া যায়।
বাসক পাতার রস স্নানের আধ ঘন্টা আগে মাথায় কয়েকদিন মাখলে উকুন মরে যায়। আমবাত ও ব্রণশোথে (ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থা) বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়।
যদি বুকে কফ জমে থাকে এবং তার জন্যে শ্বাসকষ্ট হলে বা কাশি হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং কন্টিকারীরস ১-২ চামচ, ১ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে।
প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রনা থাকলে বাসকের ফুল বেটে ২-৩ চামচ মিছরি ১-২ চামচ সরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০ গ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলি লিটার জলে ফোটাতে হবে।
২৫ মিলি লিটার থাকতে নামিয়ে তা ছেঁকে নিয়ে দিনে ২ বার করে খেলে জ্বর এবং কাশি দুইই চলে যায়।
বাসকের কচিপাতা ১০-১২ টি এক টুকরো হলুদ একসঙ্গে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগলে কয়েকদিনের মধ্যে তা সেরে যায়।
বাসকপাতা বা ফুলের রস ১-২ চামচ মধু বা চিনি ১চামচসহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস রেগে উপকার পাওয়া যায়।
পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক পাতা ২০ টি থেঁতো করে ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
বাসকের ভেষজ দাওয়াই
- শিশুর পেটে কৃমি থাকলে বাসকের ছালের ক্বাথ খাওয়ালে এর উগ্র তিক্ত স্বাদের কারণে কৃমি বের হয়ে যায়।
- যাদের হাঁপানির টান আছে তারা বাসক পাতা শুকনো করে, ওই পাতা বিড়ি বা চুরুটের মতো পাকিয়ে এর সাহায্যে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট প্রশমিত হয়।
- যাদের গায়ে ঘামের গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দূর হবে।
- বাসকপাতার রস ও শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে রং ফরসা হবে।
- এক কলসি পানিতে তিন-চারটি বাসকপাতা ফেলে তিন-চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর ব্যবহার করতে পারেন।
- পাতার রস নিয়মিত খেলে খিঁচুনি রোগ দূর হয়ে যায়।
- বাসক পাতার রস মাথায় লাগালের উকুন চলে যায়।
- বাসক পাতা বা ফুলের রস এক বা দুই চামচ মধু বা চিনি দিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
- শরীরে দাদ থাকলে বাসক পাতার রস লাগালে ভালো হয়ে যায়।
অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধা আমাদের দেশের ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। গাছের গন্ধ ঘোড়া বা অশ্ব এর মত বলেই সংস্কৃতে একে অশ্বগন্ধা বলে। বাংলায় ও আমরা অশ্বগন্ধা-ই বলে থাকি। শক্তিবর্ধক হিসেবে এবং এ্যাফ্রোডেসিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলেই ইংরেজিতে একে Indian Ginseng বলে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক অশ্বগন্ধা ঔষধি গাছ এর সম্পর্কে আরো কিছু।
Solanaceae ফ্যামিলির গাছ অশ্বগন্ধার বৈঙ্গানিক নাম Withania somnifera (L.) Dunal. Withanine নামক রাসায়নিক উপাদান এই গাছ থেকে আলাদা করার কারণে এই গাছের নামে Withania নামকরণ করা হয়েছে। আর somnifera এসেছে somnifer থেকে যার মানে নিদ্রা আনয়নকারী।
মূল এবং পাতা স্নায়ুর বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত হয়। এ গাছ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকায় পাওয়া যায়। নিদ্রা আনয়নকারী ঔষধ হিসেবে প্রচীন মেসোপটেমিয়া এবং মিশরে এর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।
নিম গাছ ও পাতা
এই নিম একটি ঔষধি গাছ, বৈজ্ঞানিক নাম (AZADIRACHTA INDICA)। এটি একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। নিম গাছের পাতা, ফল, ছাল বা বাকল, নিমের তেল,বীজ। এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়।
নিম ঔষধি গুণাগন
বিশ্বব্যাপী নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে,দন্ত চিকিতসায় ব্যাথামুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।
নিম গাছ ও পাতার ব্যবহার
- কফজনিত বুকের ব্যথাঃ অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে। এ জন্য ৩০ ফোটা নিম পাতার রশ সামান্য গরম পানিতে মিশিয়ে দিতে ৩/৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমবে। গর্ভবতী,শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এ ঔষধটি নিষেধ।
- কৃমিঃ পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায়। পেটে বড় হয়। চেহারা ফ্যকাশে হয়ে যায়। এ জন্য ৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিন ৩ বার সামান্য পানি গরমসহ খেতে হবে।
- উকুন নাশঃ নিমের পাতা বেটে হালকা করে মাথায় লাগান। ঘন্টা খানেক ধরে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ২/৩ দিন এভাবে লাগালে উকুন মরে যাবে।
- অজীর্ণঃ অনেকদিন ধরে পেটে অসুখ। পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, সিকি কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকাল- বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।
- খোস পাচড়াঃ নিম পাতা সিদ্ধ করে পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।
- পোকা-মাকড়ের কামড়ঃ পোকা মাকড় কামল দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে।
- দাতের রোগঃ নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের চাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁত হবে মজবুত, রক্ষা পাবে রোগ থেকে।
- জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিমঃ নিম তেলা একটি শক্তিশালী শ্রক্রানুনাশক হিসেবে কাজ করে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, নিম তেল মহিলাদের জন্য নতুন ধরনের কার্যকরী গর্ভনিরোধক হতে পারে। এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে সক্ষম।
- মুখের দাগ দূর করতেঃ মুখের দাগ দূর করার সব থেকে ভাল ওষুধ হল নিম৷ মুখে ব্রনের সমস্যায় ভুগছেন? চিন্তা করার দরকার নেই৷ নিম পাতার প্যাক মেখেই আপনি এর থেকে পরিত্রান পেতে পারেন৷ কি করে তৈরি করবেন এই প্যাকটা চলুন জেনে নিই৷ চার পাঁচটা নিম পাতা ভাল করে ধুয়ে মিক্সিতে পিষে নিন৷ এর মধ্যে এক চামচ মূলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন৷
তেলাকুচা
তেলাকুচা একপ্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে একে কুচিলা’, তেলা, তেলাকচু, তেলাহচি, তেলাচোরা কেলাকচু, তেলাকুচা বিম্বী ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। অনেক অঞ্চলে এটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। গাছটির ভেষজ ব্যবহারের জন্য এর পাতা, লতা, মূল ও ফল ব্যবহৃত হয়।
তেলকুচার ঔষধি গুণাগুণ
তেলাকুচা ফলে আছে ‘মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং’, ‘এনাফাইলেকটিক- রোধী’ এবং ‘এন্টিহিস্টামিন’ জাতীয় উপাদান। কবিরাজী ভেষজ চিকিৎসায় তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ (edema), হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস।
অর্জুন
অর্জুন ঔষধি গুণাগুণ
ভেষজ শাত্রে ঔষধি গাছ হিসাবে অর্জুনের ব্যবহার অগনিত।বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা। এর ঔষধি গুন মানবসমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই। চলুন তাহলে এবার ঔষধি গাছ অর্জুন এর ব্যবহার সম্পর্কে কিছু জেনে নিই।
অর্জুন এর ব্যবহার
- যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রাক্তচাপ নাই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল এর সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে পেটে যাতে বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয়, হৃৎপিন্ডের ক্ষমতা বাড়ে।এটি রক্তের কোলেষ্টরল কমায় এবং ফলত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
- বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং লিভারসিরোসিসের টনিক হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
- অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ টানিন মুখ,জিহ্বা ও মাড়ীর প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যাবহার হয়।এটি মাঢ়ীঢ় রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছাল বেটে লাগালে সেরে যায়। অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়, ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথ্যা ,প্রদর ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী।
- এটি সংকোচ ও জ্বর নিবারক হিসাবেও কাজ করে।
- এ ছাড়া অর্জুনে saponin রয়েছে, একটি যৌন উদ্দীপনা বাড়ায়। তাই চর্ম ও যৌন রোগে অর্জুন ব্যাবহ্রত হয়।যৌন উদ্দীপনা বাড়াতেও অর্জুনের ছালের রস ব্যাবহার হয়।
- অর্জুনের ছালে essential oil রয়েছে তাই অর্জুন খাদ্যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়। খাদ্যাতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সার কোষের বর্ধন রোধকারী gallic acid, ethy gallae ও lutenolin রয়েছে অর্জুন ছালে। এ কারনে এটি ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যাহারের সুযোগ রয়েছে।
কালমেঘ
আপনারা জানেন কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। ১ সে.মি.লম্বা ফুলের রং গোলাপী। দেড় থেকে দুসে.মি. লম্বা ফল অনেকটা চিলগোজার মতন দেখতে। শিকড় ব্যতীত কালমেঘ গাছটির সব অংশই ঔষুধের কাজে লাগে। কালমেঘ অত্যন্ত তেতো এবং পুষ্টিকর। তাহলে এবার ঔষধি গাছ কালমেঘের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কালমেঘ এর ব্যবহার
- মানব দেহের রোগপ্রতিরোধী শক্তি বৃদ্ধি করে।
- জ্বর, কৃমি, আমাশয়, সাধারণ শারীরিক দুর্বলতা এবং বায়ু আধিক্যে কালমেঘ অত্যন্ত উপকারী।
- শিশুদের যকৃৎ রোগে এবং হজমের সমস্যায় কালমেঘ ফলপ্রদ। কালমেঘের পাতা থেকে তৈরী আলুই পশ্চিম বাংলার ঘরোয়া ঔষুধ যা পেটের অসুখে শিশুদের দেওয়া হয়।
- টাইফয়েড রোগে এবং জীবানুরোধে কালমেঘ কার্য্করী।
- কোথাও কোথাও কালমেঘ গাছ বেটে সরষের তেলে চুবিয়ে নিয়ে চুলকানিতে লাগানো হয়।
- গাছের পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভার রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
- কালমেঘ গাছের পাতার রস জ্বর, কৃমি, অজীর্ণ, লিভার প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা শিশুদের বদহজম ও লিভারের সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহার করছে।
- এ গাছের রস রক্ত পরিষ্কারক, পাকস্থলী ও যকৃতের শক্তিবর্ধক ও রেচক হিসেবেও কাজ করে।
- এ গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে ঘা-পাঁচড়া জাতীয় রোগ দূর হয় বলে আদিবাসীদের বিশ্বাস।
পেঁয়াজ
পেয়াজের ঔষধি গুনঃ
এই পেঁয়াজ বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ, ব্যাথা, যৌন শক্তি কমে যাওয়া, শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাওয়া, অকালে বীর্যপাত কিংবা কামশক্তি কমে যাওয়া রোধ করে।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় পেঁয়াজের ব্যবহারের কথা বলেছেন। আমরা সাধারণত দুই ধরনের পেঁয়াজ দেখতে পাই- লাল এবং সাদা রঙের। পেঁয়াজের রঙের উপর ভিত্তি করে এর ব্যবহারের কথা বলেছেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা।
এখানে পেঁয়াজের আরোগ্যময় দিকগুলো হলো:
- বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ এবং রোগ প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের বাত এবং বাতজনিত রোগ থেকে মুক্তি দেয়। আয়ুর্বেদিক গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, বাত ছাড়াও হাড় এবং শরীরের সংযোগ স্থলগুলোতে প্রদাহ থাকলে তা প্রতিহত করে পেঁয়াজ।
- • পেঁয়াজের সঙ্গে অন্যান্য ভেষজ পাতার প্রলেপ ব্যবহার করলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে ওঠা এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- • মুখের কালো দাগ দূর করতে এর রস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- • কান ব্যথা এবং চোখে ঝাপসা দেখা থেকে রক্ষা করে পেঁয়াজের রস।
- • যকৃত পুনর্গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া হজম ক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে, ক্ষুধা বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য (অর্শরোগ) এবং জন্ডিসের চিকিৎসায় পেঁয়াজ উপকারী।
- • কাশি কমানোর জন্য বাড়িতে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- • এর বীজ ব্যবহার পুরুষের অকাল বন্ধ্যাত্ব থেকে রক্ষা করে।
- • রক্তপাত বন্ধে সাহায্য করে। বিশেষ করে অশ্বরোগ এবং নাকে দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধে সাহায্য করে।
- • বিভিন্ন ধরনের খোঁস-পাঁচড়া থেকে দেহকে রক্ষা করে পেঁয়াজ।
- • এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে।
এছাড়া পেঁয়াজ আমাদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা এবং দেহকে সুদৃঢ় করে। তাই সকলের উচিত প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পেঁয়াজের ব্যবহার নিশ্চিত করা।
ঘৃতকুমারী
আপনারা জানেন যে, ঘৃতকুমারী একটি বহুজীবি ভেষজ উদ্ভদ। দেখতে ফণিমনসা ক্যাকটাসের মতো হলেও এটা ক্যাকটাস নয়। আরো ভালো করে বললে ঘৃতকুমারী দেখতে ঠিক আনারসের গাছের মতো। পাতাগুলো চওড়া, পুরু ও গাঢ় সবুজ। পাতার দুপাশে করাতের মতো কাঁটা রয়েছে। পাতার ভেতরে লালার মতো পিচ্ছিল শাঁস থাকে। তাহলে এবার ঔষধি গাছ ঘৃতকুমারী সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ঘৃতকুমারী লিলিজাতীয় গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Aloe Vera। এটি Asphdelaceae (Aloe family) পরিবারের উদ্ভিদ। সারা পৃথিবীতে প্রায় ২৫০ ধরনের ঘৃতকুমারীর গাছ পাওয়া যায়।
ঘৃতকুমারী ব্যবহারঃ
নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পান করলে পরিপাকতন্ত্রের কার্যাবলি ভালো ভাবে হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। ঘৃতকুমারীর রস পানে ডায়রিয়াও সেরে যায়।
পরিশ্রমের ফলে যেসব এনজাইম কাজ করে শরীরকে ক্লান্ত ও শ্রান্ত করে তোলে, ঘৃতকুমারীর রস তাদের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরের ক্লান্তি ও শ্রান্তি দূর করে।
নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পান শরীরে শক্তি যোগায় ও ওজন ঠিক রাখে। কারণ এতে চর্বি কমানোর উপাদান রয়েছে।
ঘৃতকুমারী শরীরে সাদা রক্তকণিকা গঠনে সহায়তা করে ও বিভিন্ন ভাইরাসের সাথে লড়াই করে।
ঘৃতকুমারীর রস পানে হাড়ের সন্ধি সহজ হয় ও নতুন কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
ঘৃতকুমারীর রস নিয়মিত পান করতে চাইলে দিনে দুইবার করবেন এবং প্রতিবারে গ্রহণ করবেন ১০ মিলিলিটার। পাতার উপরের অংশ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে শুধু ভেতরের অর্ধস্বচ্ছ অংশের রস করে খাবেন। চাইলে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তবে চিনি মেশাবেন না।
রূপচর্চাতেও রয়েছে ঘৃতকুমারীর ব্যাপক অবদান। বিশেষ করে মেছতা নিরাময়ের ক্ষেত্রে। ঘৃতকুমারীরপাতা, শসা ও মধু একত্রে পেস্ট করে মেছতায় নিয়মিত লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
পাতার ভেতরের থকথকে অংশটা প্রতিদিন মেছতার ওপর লাগিয়ে মাসাজ করলে দাগ অনেকটাই হালকা হয়ে আসবে।
রোদে পোড়া ত্বকেও ঘৃতকুমারী সমান কার্যকর। ঘৃতকুমারীর রস উপটান বা মুলতানি মাটির সাথে মিশিয়ে পোড়া অংশে লাগালে উপকার পাবেন।
চালের গুঁড়ি স্ক্র্যাবার হিসেবে ব্যবহার করলে এর সাথে মেশাতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস। এতে ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি হয়ে উঠবে কোমল ও উজ্জ্বল।
খুশকি দূর করতেও ঘৃতকুমারীর জুড়ি নেই। এর রস সপ্তাহে দুদিন চুলের গোড়ায় লাগিয়ে দেখুন, মাত্র এক মাসে ফলাফল পাবেন!
চুলে ঘৃতকুমারী নিয়মিত লাগালে চুলের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। চুল হয় মোলায়েম ও ঝরঝরে। নানা গুণের সমাহারে ভরা এই ঘৃতকুমারী। এবার বেছে নিন আপনার ব্যবহারের ক্ষেত্র।
কালোজিরা
উপক্রমনিকাঃনবী করিম (সাঃ) মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগ আরোগ্যকারী ওষুধ সম্পর্কে জ্ঞান দান করেছেন-"তোমাদের জন্য 'সাম' ব্যতীত সকল রোগের আরোগ্য রয়েছে কালো জিরায়। আর সাম হলো মৃত্যু।" সুতরাং কালো জিরা হোক আমাদের নিত্য সঙ্গী। সু-স্বাস্থ্য অর্জনে ও সংরক্ষনে কালোজিরা জাত ওষুধ গ্রহনে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা জটিলতা সৃষ্টি করে না। সর্ব রোগের মহৌষধ হোমিওপ্যাথিক ও দেশীয় চিকিৎসায় সহযোগী ওষুধি গাছ রূপে এর ব্যবহার।
কালোজিরায় কি আছে
এর মধ্যে রয়েছে ফসফেট, লৌহ,ফসফরাস, কার্বো-হাইড্রেট ছাড়াও জীবাণু নাশক বিভিন্ন উপাদান সমূহ। এতে রয়েছে ক্যন্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হর্মোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক।
★★★ ক্রিয়াক্ষেত্রঃ
মস্তিষ্ক, চুল, টাক ও দাঁদ, কান,দাঁত, টনসিল, গলাব্যথা,পোড়া নারাঙ্গা বা বিসর্গ, গ্রন্থি পীড়া, ব্রণ, যাবতীয় চর্মরোগ, আঁচিল, কুষ্ঠ, হাড়ভাঙ্গা,ডায়াবেটিস, রক্তের চাড় ও কোলেষ্টরেল, কিডনী, মুত্র ওপিত্তপাথরী, লিভার ও প্লীহা,ঠান্ডা জনিত বক্ষব্যাধি,হৃদপিন্ড ও রক্তপ্রবাহ, অম্লশূল বেদনা, উদরাময়, পাকস্থলী ও মলাশয়, প্রষ্টেট, আলসার ও ক্যান্সার।চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা,মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ওসৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্কিয়তা ও অলসতা,আহারে অরুচি,মস্তিষ্কশক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়াতেও কালোজিরা উপযোগী।কালোজিরার যথাযথ ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি অজির্ত হয়। এর তেল ব্যবহারে রাতভর আপনি প্রশান্তিপর্ন নিদ্রা যেতে পারেন।রোগপ্রতিরোধক কালো জিরা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
★★★ ওষুধ প্রস্তুতঃ
আগেই বলেছি-আমরা কালো জিরার টীংচার,বড়ি ও তেল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করছি।কখনো এককভাবে কখনো অন্য ওষুধের সাথে সংমিশ্রিত করে রোগীক্ষেত্র প্রয়োগ করে থাকি।কালোজিরা তেলের সাথে জলপাই তেল, নিম তেল, রসুনের তেল, তিল তেল মিশিয়ে নেয়া যায়। কালোজিরা আরক+কমলার রস
কালোজিরা ব্যবহারঃ
আমাদের জীবনে কালোজিরার চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কালোজিরার গুনাগুন অনেক বেশি অন্যান্য ঔষধি গাছ এর তুলনায়, আমরা আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত কালোজিরা খাওয়ার চেষ্টা করব।
কালোজিরা + পুদিনা চায়ের সাথে কালোজিরা কালোজিরা + রসুন + পেঁয়াজ কালোজিরা + গাজর
মাথাব্যথাঃ
মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানেরপার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪বার কালোজিরা তেল মালিশ করূন।৩ দিন খালি পেটে চা চামচে এক চামচ করে তেল পান করুন।পাশাপাশি লক্ষণসাদৃশ্যে হোমিওপ্যাথি ওষুধ নির্বাচন করূর। সচরাচর মাথাব্যথায় মালিশের জন্য রসুনের তেল, তিল তেল ও কালোজিরা তেলের সংমিশ্রণ মাথায় ব্যবহার করুন। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ন্যাট্রম মিউর ও ক্যালকেরিয়া ফসের মধ্যে লক্ষণ মিলিয়ে একটা হোমিওপ্যাথিক ও অপরটা বায়োকেমিক হতে প্রয়োগ করুন। প্রয়োজনবোধে প্রথমে বেলেডোনা ব্যবহার করে নিতে পারেন।
চুলপড়াঃ
লেবু দিয়ে সমস্ত মাথার খুলি ভালোভাবে ঘষুণ। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও ভালোভাবে মাথা মুছে ফেলুন। তারপর মাথার চুল ভালোভাবে শুকানোর পর সম্পুর্ন মাথার খুলিতে কালোজিরা তেল মালিশ করুন। ১ সপ্তাতেই চুলপড়া বন্ধ হবে।মাথার যন্ত্রনায় কালোজিরার তেলের সাথে পুদিনার আরক দেয়া যায়।এক্ষেত্র পুদিনার টীংচার রসুনের তেল, তিলতেল, জলপাই তেল ও কালোজিরা তেল একসাথে মিশিয়েও নেয়া যেতে পারে।
কফ ও হাঁপানীঃ
বুকে ও পিঠে কালোজিরা তেল মালিশ। এক্ষেত্রে হাঁপানীতে উপকারী অন্যান্য মালিশের সাথে এটা মিশিয়েও নেয়া যেতে পারে।রীতিমতো হোমোওপ্যাথিক ওষুধ আভ্যন্তরীন প্রয়োগ।
স্মরণশক্তি ও ত্বরিত অনুভুতিঃ
চা চামচে ১ চামচ কালোজিরা তেল ও ১০০ গ্রাম পুদিনা সিদ্ধ ১০দিন সেব্য। পাশাপাশি ক্যালকেরিয়া ফস ১২এক্স, ৩০এক্স দিনে ৩ বার ৪ বড়ি করে। সামান্য ঈষদোষ্ণ পানি সহ সেবন।কালোজিরার টীংচার ও পুদিনার টীংচারের মিশ্রণ দিনে ৩ বার ১৫-২০ ফোটা করে আহারের ১ঘন্টা আগে এবং ১ ঘন্টা পরে ক্যালকেরিয়া ফস ১২এক্স ও ৪বড়ি করে। প্রয়োজন বোধে ক্যালি ফস ১২এক্স ও একসঙ্গে দেয়া যেতে পারে।
ডায়াবেটিসঃ
কালোজিরা চূর্ণ ও ডালিমের খোসাচূর্ণ মিশ্রন, কালোজিরা তেল ডায়াবেটিসে উপকারী। রোগীর অবস্থানুযায়ী অন্যান্য হোমিওপ্যাথিক মাদার ও ভেষজ সহ ব্যবস্থেয়।
কিডনির পাথর ও ব্লাডারঃ
২৫০ গ্রাম কালো জিরা ও সমপরিমান বিশুদ্ধ মধু। কালোজিরা উত্তমরূপে গুড়ে করে মধুর সাথে মিশ্রিত করে দুই চামচ মিশ্রন আধাকাপ গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন আধা চা কাপ পরিমাণ তেলসহ পান করতে হবে। কালিজিরার টীংচার মধুসহ দিনে ৩/৪ বার ১৫ ফোটা করে সেবন। পযায়ক্রমে বার্বারিস মুল আরক বা নির্দেশিত হলে অন্য কোন হোমিও অথবা বায়োকেমিক ওষুধ পাশাপাশি।
মেদ ও হৃদরোগ/ধমনী সংকোচনঃ
চায়ের সাথে নিয়মিত কালোজিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল বা আরক মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হবে, তেমনি মেদ ও বিগলিত হবে।
অ্যাসিডিটি ও গ্যাসষ্ট্রিকঃ
এককাপ দুধ ও এক বড় চামচ কালোজিরা তেল দৈনিক ৩বার ৫-৭ দিন সেবনে আরোগ্য হয়।
চোখেরপীড়াঃ
রাতে ঘুমোবার আগে চোখের উভয়পাশে ও ভুরূতে কালোজিরা তেল মালিশ করূন এবং এককাপ গাজরের রসের সাথে একমাস কালোজিরা তেল সেবন করুন। নিয়মিত গাজর খেয়ে ও কালোজিরা টীংচার সেবনে আর তেল মালিশে উপকার হবে। প্রয়োজনে নির্দেশিত হোমিও ও বায়োকেমিক ওষুধ সেবন।
উচ্চরক্তচাপঃ
যখনই গরম পানীয় বা চা পান করবেন তখনই কালোজিরা কোন না কোন ভাবে সাথ খাবেন। গরম খাদ্য বা ভাত খাওয়ার সময় কালোজিরা ভর্তা খান। এ উভয় পদ্ধতির সাথে রসুনের তেল সাথে নেন। সারা দেহে রসুন ও কালোজিরা তেল মালিশ করুন। কালোজিরা, নিম ও রসুনের তেল একসাথে মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করুন। ভালোমনে করলে পুরাতন রোগীদের ক্ষেত্রে একাজটি ২/৩ দিন অন্তরও করা যায়।
ডায়রিয়াঃ
সেলাইন ও হোমিও ওষুধের পাশাপাশি ১ কাপ দই ও বড় এক চামচ কালোজিরা তেল দিনে ২ বার ব্যবস্থেয়। এর মুল আরকও পরী্ক্ষনীয়।
জ্বরঃ
সকাল-সন্ধায় লেবুর রসের সাথে ১ বড় চামচ কালোজিরা তেল পান করুন আর কালোজিরার নস্যি গ্রহন করুন। কালোজিরা ও লেবুর টীংচার (অ্যাসেটিক অ্যাসিড) সংমিশ্রন করেও দেয়া যেতে পারে।
যৌন-দুর্বলতাঃ
কালোজিরা চুর্ণ ও যয়তুনের তেল ,(অলিভ অয়েল), ৫০ গ্রাম ,হেলেঞ্চার রস ও ২০০ গ্রাম ,খাটি মধু = একত্রে মিশিয়ে সকাল খাবারের পর ১চামচ করে সেব্য। কালোজিরার মূল আরক, হেলেঞ্চা মুল আরক, প্রয়োজনীয আরো কোন মুল আরক অলিভ অয়েল ও মধুসহ পরীক্ষনীয়।
স্ত্রীরোগ, পসব ও ভ্রুন সংরক্ষণঃ
কালোজিরা মৌরী ও মধু দৈনিক ৪ বার সেব্য।
স্নায়ুবিক উত্তেজনাঃ
কফির সাথে কালোজিরা সেবনে দুরীভুত হয়।
চেহারার কমনীয়তা ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিঃ
অলিভ অয়েল ও কালোজিরা তেল মিশিয়ে অঙ্গে মেখে ১ ঘন্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন।
উরুসন্ধিপ্রদাহঃ
স্থানটি ভালভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিয়ে ৩দিন সন্ধায় আক্রান্ত স্থানে কালোজিরা তেল লাগান সন্ধ্যায়, সকালে ধুয়ে নিন।
ছুলি/শ্বেতীঃ
আক্রান্ত স্থানে আপেল দিয়ে ঘষে কালোজিরা তেল লাগান। ১৫দিন হতে ১মাস।
আঁচিলঃ
হেলেঞ্চা দিয়ে ঘষে কালোজিরা তেল লাগান। হেলেঞ্চা মুল আরক মিশিয়ে নিলেও হবে। সাথে খেতে দিন হোমিও ওষুধ।
পিঠ ও বাতঃ
আক্রান্ত পিঠে ও অন্যান্য বাতের বেদনায় কালোজিরা তেল মালিশ করুন। খেতে দিন কোন নির্বাচিত হোমিওপ্যাথি ওষুধ।
সকল রোগের প্রতিষেধকঃ
মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
ঔষধি গাছ নিয়ে কিছু কথা
আমাদের প্রতিটি মানুষের জীবনে কিছু না কিছু রোগ রয়েছে, আর এই রোগ সারানোর জন্য আমরা বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকি, তার মধ্যে ও শুধু গাছ চিকিৎসার জন্য অন্যতম, আল কোরআনেও ওষুধের কাজ সম্পর্কে বিভিন্ন কথা রয়েছে, এই পোস্টে আমি বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ও গাছ নিয়ে কথা বলেছি, ও শুধু গাছের ব্যবহার এবং সুফল ও কুফল সম্পর্কে, এবং ঔষধি গাছের চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের জানিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম গুনাগুন রয়েছে,
- নিম গাছ (Neem Tree)
- তুলসী গাছ (Holy Basil)
- আলোয় ভেরা (Aloe Vera)
- আমলকি (Indian Gooseberry)
- গোটুকোলা (Gotu Kola)
- কালো জিরা (Black Seed)
- মেথি গাছ (Fenugreek
- মধু
- কাঠবাদাম
- কাজুবাদাম
- কিসমিস
ইত্যাদিতে, এইসব ঔষধি ও গাছের গুনাগুন ও চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের এই পোস্টে আমি জানিয়েছি।
শেষকথা
আপনারা জানতে পেরেছেন বিভিন্ন ওষুধ ও গাছের গুনাগুন ও ব্যবহার সম্পর্কে, আশা করি আপনারা, আপনাদের নিজেদেরকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ, ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধব ভাইদের এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ।